শরীয়তের আলোকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) সম্পর্কে আলোচনা এবং দলিলসহ প্রমাণ যে, ইহা বিদআত নয় বরং একটি উৎকৃষ্ট ইবাদত
আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়
ঈদে মিলাদুন্নবী ইবাদত নাকি বিদআত
বর্তমান সময়ে কয়েকটি বিষয় ইবাদত
নাকি বিদআত এই নিয়ে প্রচুর কাদা ছোড়া
ছুড়ি। একদল আলেম বলে এগুলো ইবাদত
আর অন্যদল বলে এগুলো বিদআত।
মাঝখান থেকে সাধারণ মানুষ গুলো বিভ্রান্ত
হচ্ছে। তাই আজকের আলোচনার বিষয় ঈদে মিলাদুন্নবী। আজ আমি দুইজন
আলেমের কুরআন, হাদিসের আলোকে লেখা ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কিত বর্ণনার
মাধ্যমে এসম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
চলুন মূল আলোচনায়...
ঈদে মিলাদুন্নবী ইবাদত নাকি বিদআত
বর্তমান সময়ে কয়েকটি বিষয় ইবাদত
নাকি বিদআত এই নিয়ে প্রচুর কাদা ছোড়া
ছুড়ি। একদল আলেম বলে এগুলো ইবাদত
আর অন্যদল বলে এগুলো বিদআত।
মাঝখান থেকে সাধারণ মানুষ গুলো বিভ্রান্ত
হচ্ছে। তাই আজকের আলোচনার বিষয় ঈদে মিলাদুন্নবী। আজ আমি দুইজন
আলেমের কুরআন, হাদিসের আলোকে লেখা ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কিত বর্ণনার
মাধ্যমে এসম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
চলুন মূল আলোচনায়...
প্রথম লেখকের আলোচনা-
'ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আরবি শব্দ। 'ঈদ' সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত আরবি অভিধান আল-মুনজিদের ৫৩৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, কোন কোন মর্যাদাবান ব্যক্তি বা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমবেত হওয়ার দিন বা স্মৃতিচারণের দিবসই ঈদ। কাওয়াইদুল ফিকহ্-এর ৩৯৬ পৃষ্ঠায় ঈদকে 'ঈদ' বলার কারণ বলা হয়েছে, প্রতিবছর আনন্দ নিয়ে তা ফিরে আসে। 'মিলাদ' সম্পর্কে আল-মুনজিদের ৯১৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, 'মিলাদ' অর্থ জন্ম সময়, যা কারো ঐ দিবসে পরবর্তীকালে শুকরিয়া হিসাবে পালন করা হয়। আল্লামা ইবনে মানযুর (রহ.) তার প্রসিদ্ধ অভিধান 'লিসানুল আরব' লিখেছেন, 'লোকটির মিলাদ' মানে যে সময়ে সে জন্মগ্রহণ করেছে সে সময়ের নাম। স্বভাবতই 'মিলাদ' বা 'মিলাদুন্নবী' বলতে শুধুমাত্র নবীজী (সা.)-এর জন্মের সময়ের আলোচনা, জীবনী পাঠ, তাঁর বাণী, তাঁর শরিয়ত বা তাঁর হাদিস আলোচনা, তাঁর আকৃতি-প্রকৃতি আলোচনা, তাঁর উপর একাকী বা সম্মিলিতভাবে দরুদ শরীফ পাঠ, সালাম পাঠ, কিয়াম ইত্যাদি বুঝায়। আল-কুরআনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) : মহান আল্লাহ পাকের বিশেষ কোন রহমত ও নিয়ামত দানের দিনকে ঈদরূপে পালন করার সুস্পষ্ট প্রমাণ আল-কুরআন। ইরশাদ হয়েছে, "হজরত ঈসা ইবন মরিয়ম (আ.) আল্লাহর দরবারে তাঁর উম্মতের জন্য খাদ্যের আবেদন করে বলেন, "হে আল্লাহ! আমাদের প্রতি আকাশ হতে খাদ্যভরা খাঞ্চা নাজিল করুন, যা আমাদের এবং আমাদের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তীদের জন্য হবে ঈদস্বরূপ এবং আপনার পক্ষ হতে হবে এক নিদর্শন। আর আমাদের জীবিকা দান করুন, আপনিই তো সর্বোত্তম জীবিকাদাতা।" (সূরা মায়িদা:১১৪)
সূরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে, "হে নবী! আপনি বলে দিন, আল্লাহ পাকের ফজল ও রহমত প্রাপ্তিতে তারা যেন আনন্দ প্রকাশ করে; তারা যা পুঞ্জীভূত করে, তা অপেক্ষা এটা উত্তম।" আয়াতের তাফসিরে ইবনে জারীর তাবারি উল্লেখ করেছেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, 'ফজল' দ্বারা ইসলাম ও 'রহমত' দ্বারা আল-কুরআন বুঝানো হয়েছে। হাদিসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) প্রসঙ্গ : হাদিসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা সিহাহ্ সিত্তা কিতাবে বিধৃত হয়েছে। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশেষ আমল, শুকরিয়া, দরুদ শরীফ, মিলাদ-কিয়াম, সিরাত পর্যালোচনার আমল সাহাবায়ে কিরামদের মাঝে দেখতে পাই। মিলাদ সম্পর্কে সহিহ্ মুসলিম (মিসর) ২২/৮১৯-এর হাদিসে হযরত আবু কাতাদা আল আনসারী (রা.) বলেন, সোমবার দিন রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বলেন, "এইদিনে (সোমবার) আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এইদিনেই আমি নবুয়ত পেয়েছি।" ইমাম আহমদ (র.) তাঁর মুসনাদে সহিহ (৪/১৭২/-১৭৩/২৫০৬) বর্ণনা করেছেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. সোমবারে জন্মগ্রহণ করেন, সোমবারে ইন্তেকাল করেন, সোমবারে মক্কা থেকে হিজরত করেন, সোমবারে মদীনা পৌঁছান, সোমবারেই হাজরে আসওয়াদ উত্তোলন করেন। আ'মে মিলাদুন্নবী (সা.) সম্পর্কে তিরমিজী শরীফে (৫/৫৫০-৩৬১৯) হজরত কায়স ইবনে মাখরামা (রা.) বলেন, আমি ও রাসূলুল্লাহ (সা.) দু'জনই হাতীর বছরে জন্মগ্রহণ করেছি। হজরত উসমান ইবনে আফফান (রা.) কুবাশ ইবনে আশইয়ামকে প্রশ্ন করেন, আপনি বড় না রাসূলুল্লাহ (সা.) বড় (বয়স)? তিনি উত্তরে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) 'হাতীর বছর' জন্মগ্রহণ করেছেন। ঐতিহাসিক মতে এ বছর ৫৭০ বা ৫৭১ ঈসায়ী সাল। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মদিন সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইবনে হিশাম, ইবনে সা'দ, ইবনে কাসীর, কাসতালানী ও অন্যান্য ঐতিহাসিক, মিলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী লেখকগণ ঐতিহাসিক তথ্যসূত্রে নানা মত দিয়েছেন। কারো মতে তিনি মুহররম মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন। কারো মতে তিনি রবিউল আউয়াল মাসের ২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় হিজরি শতকের অন্যতম ঐতিহাসিক ও মাগাজী প্রণেতা মুহাদ্দিস আবু মাশার নাজীহ ইবনে আবদুর রহমান আস সিনদী (১৭০ হি.) এই সালটি গ্রহণ করেছেন। আল্লামা কাসতালানী ও জারকানী জন্ম তারিখ হিসেবে ৮ তারিখ গ্রহণ করেছেন। মিলাদুন্নবীর উপর প্রথম ঐতিহাসিক গ্রন্থ রচনাকারী আল্লামা আবুল খাত্তার ইবনে দেহিয়া (৬৩৩ হি.) 'আত-তানবীর ফী মাওলিদিল বাশির আন নজীর' গ্রন্থে এই মতটিকে গ্রহণ করেছেন। ঐতিহাসিক মুহাম্মদ ওমর আল-ওয়াকেদী (২০৭ হি.) ১০ তারিখ এবং ইবনে সা'দ তাঁর বিখ্যাত 'আত তাবাকাতুল কুবরা'-এ ২ ও ১০ তারিখ উল্লেখ করেছেন। ইবনে হিশাম তাঁর আস-সীরাতুন নাবাবীয়াহ (মিসর, ১ম সংস্করণ ১৯৮৭) ১/১৮৩-তে দ্বিতীয় হিজরির প্রখ্যাত ঐতিহাসিক মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক (১৫১ হি.) জন্ম তারিখ ১২ রবিউল আউয়াল গ্রহণ করেন, যা ইবনে কাসীর হজরত জাবির ও ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে গ্রহণ করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.)সহ হজরত আমের আনসারী (রা.)-এর ঘরে গমন করে দেখতে পেলেন যে, আবু আমের আনসারী (রা.) তাঁর নিজ সন্তানাদিসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনকে একত্রিত করে রাসূলুল্লাহ (সা.) বিলাদাতের বিবরণী শুনাচ্ছেন। তাঁর এ কাজে আল্লাহর রাসূল (সা.) অত্যন্ত আনন্দ অনুভব করলেন এবং বললেন, হে আমের ! নিশ্চয়ই আল্লাহতোমার জন্য তাঁর রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করেছেন এবং ফিরিশতাকুল তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। যারা তোমার মতো এরূপ আমল করবে, তারাও পরিত্রাণ পাবে। (হাকীকাতে মুহাম্মাদী, পৃ-২৬৩)। তাই ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনে শরীয়তসম্মত আমল করি। আল্লাহপাক আমাদের সঠিক ও সহিহ ধারণা দান করুন।
দ্বিতীয় লেখকের আলোচনা-
ঈদ অর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা। আর মিলাদ ও নবী দুটি শব্দ একত্রে মিলিয়ে মিলাদুন্নবী বলা হয়। আর নবী শব্দ দ্বারা রাহমাতুলি্লল আলামিন হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.) কে বোঝানো হয়েছে। এককথায়, ঈদে মিলাদুন্নবী অর্থ হুজুর পাক (সা.) এর পবিত্র 'বেলাদত শরিফ' উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা। আর পরিভাষায় বললে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর শুভাগমন স্মরণে খুশি প্রকাশ করে মিলাদ শরিফ মাহফিলের ব্যবস্থা করা, শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা আলোচনা করা, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরিফ পাঠ, তাওয়াল্লুদ বা জন্মকালীন ঘটনা মজলিস করে আলোচনা করা, দাঁড়িয়ে সালাম, কাসিদা বা প্রশংসামূলক কবিতা, ওয়াজ-নসিহত, দোয়া-মোনাজাত, সম্ভব মতো মেহমান নেওয়াজির সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান করা। মহানবী (সা.) এর জন্মদিন সম্পর্কে আল কোরআনে আলোচনা করা হয়নি। কিন্তু হাদিস শরিফে মহানবী (সা.) এর জন্মকাল সম্পর্কে জানা যায়। হজরত আবু কাতাদা আল আনসারি (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কে সোমবার দিন রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'এ দিনে (সোমবারে) আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এ দিনেই আমি নবুয়ত পেয়েছি।' (মুসলিম)
ঐতিহাসিক মুহাম্মদ বিন ইসহাক (রহ.) এর মতে, রাসূল (সা.) হাতি সালের (৫৭০ খ্রি.) রবিউল আউয়াল মাসে ১২ তারিখ সোমবার জন্মগ্রহণ করেন। (আররউজুল উনুফ ২৭৬/১)।
নবী করিম (সা.) সোমবার রোজা রেখে নিজের জন্মদিন স্মরণ করতেন। এর দ্বারা ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বৈধতা ও গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। তারপরও কিছু লোক ঈদে মিলাদুন্নবী পালন সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন। তাদের জবাবে কোরআন মজিদ থেকে কয়েকটি দলিল পেশ করা হলো, যাতে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তায়ালা নবী-রাসূলদের জন্ম ও মৃত্যুদিবস স্মরণ করার হুকুম দিয়েছেন
মিলাদের কোরআনিক দলিল
১নং দলিল : হে রাসূল (সা.) আপনি বলুন_ আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তাঁর করুণায় সুতরাং এতে যেন তারা আনন্দিত হয়। এটিই উত্তম সে সমুদয় থেকে, যা তারা সঞ্চয় করেছে। (সূরা ইউনুস : ৫৮)।
এ সম্পর্কে তাফসিরে তাবারি, রুহুল মায়ানি এবং আদ-দুররে মানসুরে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত আছে_ ফজল দ্বারা উদ্দেশ্য ইসলাম আর রহমত দ্বারা উদ্দেশ্য কোরআন। মুফতি শফী (রহ.) বলেন, মানুষের কর্তব্য হলো আল্লাহ তায়ালার রহমত অনুগ্রহকেই প্রকৃত আনন্দের বিষয় মনে করা এবং একমাত্র তাতেই আনন্দিত হওয়া। (মারেফুল কোরআন : ৬১১ পৃষ্ঠা)।
২নং দলিল : আল্লাহ বলেন, 'আর তোমরা সেই নেয়ামতের কথা স্মরণ করো, যা তোমাদের আল্লাহ তায়ালা দান করেছেন।' হজরত ওমর (রা.) বলেন যে, এই নেয়ামত দ্বারা মুহাম্মদ (সা.) কে বোঝানো হয়েছে। (বোখারি দ্বিতীয় খ- পৃষ্ঠা: ৫৬৬)।
৩নং দলিল : 'এবং শান্তি তাঁরই ওপর যেদিন জন্মগ্রহণ করেছেন, যেদিন মৃত্যুবরণ করবেন এবং যেদিন জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থিত হবেন।' (সূরা মরিয়ম :১৫ )। এ আয়াতে হজরত ইয়াহ্ইয়া (আ.) এর সম্পূর্ণ মিলাদ বর্ণনা করা হয়েছে।
৪নং দলিল : আল্লাহ তায়ালা হজরত ঈসা (আ.) এর কথা উদ্ধৃত করেন, 'এবং ওই শান্তি আমার প্রতি, যেদিন আমি জন্মলাভ করেছি, এবং যেদিন আমার মৃত্যু হবে, আর যেদিন জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো।' (সূরা মরিয়ম : ৩৩)। এ আয়াতে কারিমায় আল্লাহ তায়ালা মরিয়ম (আ.) এর গর্ভে হজরত ঈসা নবী (আ.) এর জন্মের কথাও জানিয়েছেন।
৫নং দলিল : পবিত্র কোরআনে আরও আছে,
'তাদের (মানুষ) আল্লাহর দিনগুলো সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দিন।' (সূরা ইবরাহিম : ৫)। এ আয়াতে 'আল্লাহর দিনগুলো' হলো সেসব দিন, যাতে বড় বড় ঘটনা ঘটেছিল বা এমনসব দিন যেগুলোতে আল্লাহ পাক তাঁর সৃষ্টিকুলের প্রতি তাঁরই বড় নেয়ামত তথা আশীর্বাদ বর্ষণ করেছিলেন। নবী পাকের জন্মদিন বড় ঘটনার অন্যতম।
৬নং দলিল : 'এবং আপনার প্রতিপালকের নেয়ামতের বেশি বেশি আলোচনা তথা প্রচার-প্রসার করুন।' (সূরা দোহা : ১১)। এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) 'নেয়ামত' শব্দটির ব্যাখ্যায় বলেন, 'আয়াতে উলি্লখিত 'নেয়ামত' শব্দটি দ্বারা নবুয়ত ও দ্বীন ইসলামকে বোঝানো হয়েছে।' (তাফসিরে ইবনে আব্বাস, সূরা দোহা : ৬৫১ পৃষ্ঠা)।
৭নং দলিল : আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, 'আর রাসূলদের কাহিনী থেকে সবকিছু আমরা তোমার কাছে বর্ণনা করছি এজন্য যে, সেসবের দ্বারা আমরা আপনার চিত্তকে বলিষ্ঠ করবো।' (সূরা হুদ :১২০)।
আমরা দেখলাম, উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নবী ও রাসূলদের আলোচনাকে মোমিনদের ঈমান ও শক্তিবর্ধক হিসেবে অভিহিত করেছেন। এ আয়াতে নবী-রাসূলদের জীবনী আলোচনা করার বৈধতা ফুটে ওঠে।
৮নং দলিল : 'আর যে আল্লাহর নিদর্শনাবলিকে সম্মান করবে, সেটা তার কলবে তাকওয়ার পরিচয়বাহক।' (সূরা হজ : ৩৬)। 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা' নামক কিতাবে বলা হয়েছে_ আল্লাহর নিদর্শনাবলির মধ্যে সবচেয়ে বড় নিদর্শন হচ্ছে চারটি- ১. কোরআন মাজিদ, ২. কাবা শরিফ, ৩. নবী মুহাম্মদ (সা.) ও ৪. নামাজ ফায়েদা : নবীকে তাজিম করা তাকওয়ার পরিচয়বাহক। আর মিলাদের মাধ্যমে নবীর মহব্বত ও তাকওয়া আরও বৃদ্ধি পায়।
লেখক: মুফতি ওসমান গনি সালেহী
মোহাদ্দিস, দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা, ঢাকা
উপরোক্ত আলোচনা হতে সুস্পষ্ট বোঝা যায় যে মিলাদুন্নবী বর্তমান মানুষের সৃষ্টিকৃত মনগড়া কোনো ইবাদত নয় ।ইহা হজরত মুহাম্মদ সা: এর যুগেও ছিল এবং একটা বরতময় আমল ও বটে তাই ঈদে মিলাদুন্নবী বিদআত হওয়ার কোনপ্রশ্নই ওঠে না।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আতিকুর রহমান
আলহামদুলিল্লাহ। আমার মনে হয় মিলাদ যে বৈধ একটি ইবাদত তা প্রমানের জন্য এই পোস্টটি ই যথেষ্ট। তাই মিলাদ বিরোধীদের জবাব দিতে পোস্টটি ফেসবুকে শেয়ার করলাম। ��
উত্তরমুছুন>> আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করবে ইনশাআল্লাহ।
উত্তরমুছুনবোখারী শরিফে মিলাদুন্নবী পালনের হাদিস আছে তা আজ পর্যন্ত কোন মুহাদ্দিস যে খুঁজে পায় নাই সেটা তাদের ব্যর্থতা, তবে আমার ঘরে বুখারী মুসলিমের কিতাব থাকা সত্বেও মিলাদুন্নবীর সেই ইবাদতের হাদিসের হদিস না পাওয়া সত্যই লজ্জার বিষয়। আজ পর্যন্ত কোন আলেম কোরানে কিংবা কোন হাদিস গ্রন্থে নবীর নিশ্চিত কোন জন্মতারিখ খুঁজে পাই নাই যার জন্য কোন মুহাদ্দেস ইমাম, মুফাসসের ইমাম এই মহান ইবাদত সম্পর্কে ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেন নাই।
উত্তরমুছুনসর্বপ্রথম ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান থেকে একজন বুজর্গ এসে এই দেশে জসন জুলুস না করলে এই ইবাদত সম্পর্কে বাঙলার মুসলমানদের অজানাই থেকে যেতো। আল্লহর নবীর সাহাবাগণ যদি এই সব বুজর্গদের মতো কোরান বুঝতেন, যদি তাঁরা জানতেন ১২ই রবিউল আউয়াল মিলাদুন্নবীর আনন্দ করার ইবাদত রয়েছে, তবে তারা কি উট সাজিয়ে, সেই উটের পিঠে নবী (সঃ) কে বসিয়ে মদিনার রাস্তায় রাস্তায় জসন জুলুস করতেন না? নবীর মৃত্যুর পর আবু বকর, উমর, ওসমান, আলী, হাসা্ হোসেন (রাঃ) কে সাজানো উটের পিঠে বসিয়ে জশনে জুলুসে করতেন না? হায়রে সাহাবার জামাত! কেন যে তাঁরা বুঝলেন না নবী হচ্ছে উম্মতের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামত। যদি বুঝতেন তাহলে প্রতি শুক্রবারে কেয়াম না করে কি ছাড়তেন? বিরিয়ানি পাকিয়ে মিলাদুন্নবী না করে কি ছাড়তেন? সাহাবার জামায়াত বুঝেন নাই কিন্তু মিশর, ইয়ামেন ইরাক ইরান, ভারতীয় উপমহাদেশের কিছু অতি বিজ্ঞ আলেমরা বুঝেছেন বলেইতো এরা জুলুস জসন করে প্রমাণ করেন এটা সব ঈদের সেরা ঈদ। ইনাদের জ্ঞান, নবী প্রেম, তাকওয়ার সামনে সাহাবা, তাবেঈন, তবে তাবেঈনের তাকওয়া কি নগণ্য মনে হয় না?
যদি সাহাবাগণ এই ইবাদতটি এইভাবে করতেন তবে আমরাও করতে পারতাম। যেহাতু করেন নাই সেহাতু সুন্নাহর কঠোর অনুসারী আলেমদের কাছে এটি নতুন আবিষ্কৃত বানোয়াট শরিয়ত। যা নবীর উপর নবীগিরীর সামিল। এ জন্যই আল্লাহর নবী (সঃ)বলেছেন - তিনি ইসলামকে মোকাম্মেল বা সম্পূর্ণ করে গেছেন। এর মধ্যে যে কেন সংযোজনই বিদ’আ। আর সকল বিদ’আই পথভ্রষ্টটা। সকল পথভ্রষ্টতার প্রতিফল জাহান্নাম। শরিয়ত সম্পর্কে আমার জ্ঞান এতটুকুই।
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ। বিরিয়ানি বা খিচুড়ি রান্না করা কোনো ইবাদতের অংশ নয়। এটাকে কেউ এবাদত মনে করলে তা বিদআত। কিন্তু এই দিনটিতে আপনি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানবকে আল্লাহর কাছে থেকে উপহার পেয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা বিদআত মনে করলে আমাদের আরও একবার ভাবতে হবে আমরা ঠিক কতটুকু আল্লাহর শুকরিয়া করবো। আদৌ তার শুকরিয়া আদায়ের কোন সীমাবদ্ধতা আছে কি না!
মুছুন