কেয়ামতের আলামত সমূহ। পর্ব-১
কিয়ামত সংগঠিত হওয়ার পূর্বে কিছু কিছু আলামত পরিলক্ষিত হবে। কিয়ামতের সর্ব প্রথম আলামত হচ্ছে নবী সা. এর আগমন। কারণ তিনি হলেন সর্ব শেষ নবী। তারপর কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী আসবে না। নবী সা. এ ব্যাপারে বলেন, আমি এবং কিয়ামত একসাথে প্রেরিত হয়েছে। এ কথা বলে নবী সাঃ হাতের শাহাদাত আঙ্গুল এবং মধ্যমা আঙ্গুল একত্রিত করে দেখালেন। [মুসলিম] আল্লাহ তায়ালা বলেন,“ কিয়ামত নিকটবর্তী হয়ে গেছে এবং চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হয়েছে। ” [সূরা কামার:১] কিয়ামতের সময় ফেতনা ফাসাদ বেড়ে যাবে। মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হবে, রক্তপাত করবে। নবী সা. বলেন, প্রথম যুগের মুমিনদেরকে ফিতনা থেকে হেফাজত রাখা হয়েছে। আখেরি যামানায় এই ঊম্মতকে বিভিন্ন ধরণের ফিতনায় ও বিপদে ফেলে পরীক্ষা করা হবে। [কিতাবুল ফিতান মুসলিম শরীফ]
ফিতনার সময় আমাদের কি করনীয় সে বিষয়ে হাদীসে নির্দেশনা রয়েছে। এ ব্যাপারে ফেতনায় যোগ না দিয়ে নিজ নিজ কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। কেউ যদি ফেতনায় লিপ্ত হতে বাধ্য করে তবে সে গুনাহগার হবে। ফেতনা আসে আমাদের কর্মফলের পরিনতি হিসেবে। তাই আমাদের ফেতনার সময় বেশি বেশি করে তওবা করতে হবে। হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, কিয়ামতের পূর্বে বহু ভন্ড নবীর আবির্ভাব হবে। আবু দাউদ ও তিরমিযী শরিফে উল্লেখ আছে, আমার উম্মতের একদল লোক মুসরিকদের সাথে মিলিত হওয়ার পূর্বে কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে না। আর আমার উম্মতদের মধ্যে ত্রিশজন মিথ্যুকের আগমন ঘটবে। সকলেই নবুয়াতের দাবি করবে অথচ আমি সর্বশেষ নবী। আমার পর কেয়ামতের পূর্বে আর কোন নবী আসবে না। নবীজীর বানী সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। নবী সা. এর শেষ বয়সের দিকে মুসায়লামা কাযযাব নবুয়াতের দাবী করেছিল। তার অনুসারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে ইয়ামামার যুদ্ধে আবু বকর রা. এর খেলাফত কালে সাহাবীগণ এ ফিতনার অবসান ঘটান। এছাড়া আসওয়াদ আনাসি, সাজা, মুখতার, আছ ছাকাফী, কাযযাব অন্যতম। কেয়ামতের পূর্বে হেযাযের (আরব উপদ্বীপের) জমিন থেকে বড় একটি আগুন বের হবে। আখেরি যামানায় আমানতের খিয়ানত করা হবে। এখন আমরা আমাদের সমাজের দিকে তাকালে খিয়ানতের ব্যাপক প্রভাব দেখতে পাই। তবে আমানত বলতে টাকা পয়সা ধন সম্পদকে বুঝায় না। সাহাবাদের প্রশ্নের জবাবে নবীজি বলেন, যখন অযোগ্য লোকদের দায়িত্ব দেওয়া হবে তখন কেয়ামতের অপেক্ষা করতে। এছাড়া ইলম উঠে যাবে। আল্লাহ তা আলা মানুষের অন্তর থেকে ইলম টেনে বের করে নিবেন না। বরং আলেমদের মৃত্যুর মাধ্যমে ইলম উঠিয়ে নিবেন। এমন কি যখন কোন আলেম অবশিষ্ট থাকবে না তখন লোকেরা মুর্খদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করবে। তাদেরকে কোন মাসায়লা জিজ্ঞেস করা হলে বিনা ইলমে ফতোয়া দিবে। ফলে তারা নিজেরা গোমরাহ হবে এবং মানুষদেরকে গোমরাহ করবে। আমাদের দেশে মুসলিম সমাজের মধ্যেও জ্বীনা ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়ছে। এটি কেয়ামতের একটি আলামত। মুসলিম দেশের সরকারগুলোও জ্বীনা ব্যবিচার রোধে তেমন ভূমিকা নিচ্ছ না। হাদীসে বর্ণিত আছে , আখেরি যামানায় ভাল লোকগুলো চলে যাবার পর শুধু মাত্র দুষ্ট লোকেরা অবশিষ্ট থাকবে। তারা প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষের সামনে গাধার ন্যায় ব্যাভিচারে লিপ্ত হবে। তাদের উপর কেয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। (মুসলিম)। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুদকে হারাম করেছেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অন্যান্য দেশগুলোর মত মুসলিম দেশগুলোতে সুদের প্রকোপ মারাত্বকভাবে বেড়ে গেছে। কেয়ামতের পূর্বে মসজিদগুলো চাকচিক্যময় হবে কিন্তু তাতে কাম্য সংখ্যক মুসল্লি থাকবে না। বর্তমানে দেখা যায় লোকেরা মসজিদ নিয়ে গর্ব করছে। মসজিদকে চাকচিক্যময় করে তোলছে। কিšতু মসজিদকে আবাদ করার ক্ষেত্রে মুসলমানরা উদাসিনতা দেখাচ্ছে। তাই উমর রাঃ মসজিদকে জাকজমকপূর্ণ করতে নিষধ করেছেন। মোট কথা মসজিদকে ইবাদতের মাধ্যমেই আবাদ করতে হবে। মুসলমানদের মধ্যে মদ্যপান ও সুদের ব্যবসা ছড়িয়ে পড়া কেয়ামতের আরেকটি লক্ষণ। কেউ কেই অন্য নাম দিয়ে এ ব্যবসা চালাচ্ছে। মুসলিম দেশগুলোতেও বর্তমানে মদ বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হয়। কেয়ামতের পূর্বে মুসলমানদের মধ্যে গান বাজনার পরিমান বেড়ে যাবে। এ পাপের কারণে অতীতে কোন কোন জাতিকে এ কারণে মটির নিচে দাবিয়ে দিয়ে, উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে কিংবা চেহারা পরিবর্তন করে ধবংস করা হয়েছে। এখানে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষ মারা যেতে দেখি। এটিও কেয়ামতের একটি আলামত। কিয়ামতের একটি আলামত হচ্ছে জুলুম নির্যাতন বেড়ে যাওয়া। আমাদের সমাজে বর্তমানে দেখা যায় সামান্য কারণে জুলুম নির্যাতন বেড়ে যাচ্ছে।কিয়াতের আরেকটি আলামত হচ্ছে ধন সম্পদ বৃদিধ পাওয়া। গরিব লোকের সংখ্যা কমে যাওয়া। এসময় সাহায্য নেওয়ার মত লোক পাওয়া যাবে না। মুসলিম শরিফের কিতাবুত যাকাত গ্রন্থে বলা হয়েছে, ততক্ষণ প্রর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে না যতক্ষণ না মানুষের ধন সম্পদ বৃদ্ধি পাবে। মানুষ যাকাতের মাল নিয়ে সঙ্কট পড়বে। যাকাতের মাল মানুষের কাছে পেশ করা হলে সে বলবে এতে আমার কোন প্রয়োজন নেই। তবে এ আলামতটি একাধিক সময় দেখা দিতে পারে। ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান বলেন , উমার ইবনে আবদুল আজিজর সময় একবার এ অবস্থা হয়েছিল।
কেয়ামতের আলামতগুলো দেখা গেলে আমাদেও কি করতে হবে সে সম্পর্কে মহানবী সাঃ অঅমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমাদেরকে আমল করতে হবে।
Ads By SIT
ভাই blogspot এ কিভাবে এই advertise বসান প্লিজ বলবেন।আমার একটা ব্লগ আছে সেখানে বসাতে চাই
উত্তরমুছুনGoogle adsense অথবা বিভিন্নি অ্যাড নেটওয়ার্ক আছে যারা এরকম সেবা দিয়ে থাকে
মুছুন